ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ০২ আগষ্ট, ২০১৬ইং (বাংলা-নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম): শরীরের বিভিন্ন অংশে ট্যাটু লাগানো মানুষের অন্যতম প্রিয় একটি শখ। অনেকে কৌতুহলী হয়ে বা ঝোঁকে পড়ে এই কাজটি করে থাকে। তবে এটি শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ছাড়াও এখন মানুষের উপকারেও ব্যবহার করা যাবে।
সম্প্রতি গবেষকরা এমন এক ধরনের নমনীয় ইলেকট্রোড বা তড়িৎদ্বার তৈরি করেছেন,যা শরীরের কোন অংশে স্বল্প সময়ের জন্য ট্যাটু হিসেবে লাগানো যাবে। এই ট্যাটু সদৃশ তড়িৎদ্বার ত্বক থেকে বৈদ্যুতিক সঙ্কেত নির্ণয় করতে সক্ষম। এর ফলে দেহের মাংসপেশীর সঙ্কোচন-প্রসারণসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশদভাবে জানা সম্ভব হবে বলে গবেষকরা ধারণা করছেন।
তড়িৎদ্বারটির মূল বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি অত্যাধিক পুরু। ফলে গঠনগত কারণে এটি শরীরের ত্বকের সাথে সহজেই লেগে থাকে। এমনকি খালি চোখে একে ত্বক থেকে আলাদা করা যায় না। ট্যাটুটি মূলত কার্বনের তড়িৎদ্বার দিয়ে তৈরি। এছাড়া এতে এক ধরনের আঠালো পৃষ্ঠ থাকে যা একে ত্বকের চামড়ার সাথে দৃঢ়ভাবে আটকে থাকতে সাহায্য করে। পুরো অংশটি এক ধরনের তড়িৎ পরিবাহী পলিমার দিয়ে আবৃত করা থাকে।
এই বৈদ্যুতিক তড়িৎদ্বারকে দিয়ে অনেক কাজ করা সম্ভব। এর সাহায্যে মুখমন্ডলের অভিব্যক্তির উপর ভিত্তি করে মানুষের অনুভূতি নির্ণয় করা যেতে পারে। এছাড়াও মস্তিষ্কের বিকৃতিজনিত রোগের গবেষণায় ও কৃত্রিম অঙ্গের নিয়ন্ত্রণে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রকল্পটির গবেষক,তড়িৎ প্রকৌশলী ইয়ায়েল হানেয়িন ইতিমধ্যে তার গবেষণাগারে মানসিক অবস্থার মূল্যায়নে এই ট্যাটুর ব্যবহারের সম্ভাব্য পথগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু করেছেন। তিনি তার গবেষণাপত্রে মাংসপেশীর দৃঢ়তা ও বিকৃতিজনিত নিউরোরোগ পারকিনসন’স ডিজিজ নির্ণয়ে এটি ব্যবহারের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন।
ট্যাটুটি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এটি কোন অস্বস্তি ছাড়াই অনেকক্ষণ শরীরে লাগিয়ে রাখা যায়।ফলে ত্বকের উপর সহজেই এটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে এর সাহায্যে দ্রুত বৈদ্যুতিক সঙ্কেত সংগ্রহ ও সেগুলো বিশ্লেষণে গবেষকরা এখনও কাজ করে যাচ্ছেন।
আশা করা যায়,অদূর ভবিষ্যতেই এটি মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা শুরু হবে। লেখকঃ নাসরুল্লাহ্ মাসুদ